খাদিতে বৈচিত্র্য


.সাদা কিংবা চাপা সাদা রঙে ডিজাইনাররা কতখানি তুলে ধরবেন তাঁদের সৃজনশীলতা, এই কৌতূহলই হয়তো ছিল খাদি উৎসবের দর্শকদের মনে। শুরুতেই ডিজাইনার কুহু প্লামোন্দন যেন রাঙিয়ে দিলেন র্যাম্প। হলুদ, ফুশিয়া, গোলাপি—কত রঙের বাহার তাঁর সংগ্রহে। খাদির রূপ-রঙে এত বৈচিত্র্য!
শাড়ি বা চাদরই শুধু হবে খাদির, এ ধারণাও ভেঙে গেল। একের পর এক ডিজাইনারদের সংগ্রহ দেখে মনে হলো পোশাকগুলো আন্তর্জাতিক কোনো অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের রেড কার্পেটেও দিব্যি পরতে পারবেন যেকোনো তারকা। ম্যাক্সি ড্রেস, গাউন, স্কার্ট, প্যান্ট-টপ বাদ নেই কোনোটাই। এমনকি ট্রেঞ্চ কোটও দেখা গেল। জ্যাকেটের বৈচিত্র্য দেখে বোঝার উপায় নেই উপকরণটা একদমই দেশি খাদি। নানা রকম কোট, কেপ, পনচো এগুলোও ছিল। শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজের স্টাইলিংও করা হয়েছে আন্তর্জাতিক ধারার সঙ্গে মিল রেখে। শাড়ির সঙ্গে কেপ কিংবা জ্যাকেট পরানো হয়েছে। শাড়ি পরার ঢংয়েও ছিল নতুনত্ব। ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্ট, কোট, শাল—এসবও দেখা গেল।
খাদিতেই বৈচিত্র্যময় পোশাকশুধু খাদি নয়, ডিজাইনাররা তুলে ধরেছেন আরও নানা ঐতিহ্য। একটি নির্দিষ্ট মোটিফ ধরে কাজ করেছেন তাঁরা। যেমন শখের হাঁড়ি, কাগজ কাটাই, শীতল পাটি, আলপনা, হাতপাখা, পিঠার নকশা। পোশাকের নকশায় উঠে এসেছে সেসব। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খাদিকে তুলে ধরার ইচ্ছা নিয়েই এ আয়োজন করেছিলেন ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশের সদস্যরা। সে উদ্দেশ্যে তাঁরা শতভাগ শ্রম দিয়েছেন এবং সফলও হয়েছেন বলা যায়। দেশি উপকরণ, দেশি মোটিফে তৈরি পোশাকগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করবার মতোই।
এ আয়োজনে ফ্যাশন শোর পাশাপাশি খাদি নিয়ে এক প্রদর্শনীও ছিল। উদ্বোধনী দিনে এসেছিলেন সংস্কৃতি-বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত মেরেটা লানদিমো, ভারতীয় দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাশে জে এস নন্দা, গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রমুখ।
১১ ও ১২ ডিসেম্বর দুই দিনের এ আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের ডিজাইনাররা। মাহিন খান, এমদাদ হক, শৈবাল সাহা, চন্দনা দেওয়ান, লিপি খন্দকার, বিপ্লব সাহা, হুমায়রা খান, মারিয়া সুলতানা, কুহু প্লামোন্দন, ফারাহ আনজুম বারী, শাহরুখ আমিন, শাবানা আলী, নওশিন খায়ের, তেনজিং চাকমা, রিফাত রেজা, আফসানা ফেরদৌসি, ফারাহ দিবা ও সামিয়া রফিক অংশ নেন বাংলাদেশ থেকে। ভারত থেকে এসেছিলেন সায়ন্তন সরকার, পারমিতা ব্যানার্জি, সংযুক্তা রায়, শান্তনু দাশ, রিমি নায়েক ও দেবারুণ মুখার্জি।
অনুষ্ঠানটির মূল পৃষ্ঠপোষক ছিল ট্রেসেমে।
প্রদর্শনীতে খাদি সুতা কাটা আর খাদির কাপড় বুননও দেখানো হয়

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Categories